বইটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন যখন লিখি (২২/৯/২০১৬) তখন বইটির মূল লেখক ও অনুবাদক উভয়ে জীবিত ছিলেন।

আজকে (২৫/২/২৫ মঙ্গলবার বাদ যুহরো) যখন লেখাটি সাইটে পোস্ট করি, তখন এর অনুবাদক মুফতি রাইহান ভাইকে মাত্রই হারামের আঙ্গিনায় জানাযা পড়িয়ে মক্কার মাকবারায়ে শুহাদায় দাফন করা হলো। রাহিমাহুমাল্লাহু তাআলা রাহমাতান ওয়াসিআহ।

বইয়ের নাম: নবীদের পুণ্যভূমিতে
পাকিস্তানের মুফতিয়ে আযম আল্লামা রফী উসমানী রাহ. লিখিত এক আজীব সফরনামা৷ যা তিনি উর্দুন (জর্ডান), শাম (সিরিয়া) প্রভৃতি আরব দেশসমূহ ভ্রমণের বৃত্তান্ত নিয়ে লিখেছেন৷

অনুবাদ: মুফতি খাইরান খাইরুল্লাহ রাহ.

বইটি সম্পর্কে কী লিখব? যা লিখব, তা-ই কম হবে৷ মন চাচ্ছে পুরো বইয়ের সবগুলো বিষয়বস্তু এই পোস্টে সংক্ষেপ করে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করে দিই৷ কিন্তু তা সম্ভব হবে না৷ বইটির হকও আদায় হবে না৷ প্রথমেই উর্দুন সফরের ইতিবৃত্ত এসেছে৷ আসহাবে কাহফের গুহা পরিদর্শনের বিবরণ থেকে শিহরণ জাগানিয়া ভ্রমণবৃত্তান্তের শুরু৷ বইটি শুরু করেই বুঝতে পারলাম ভিতরে আরো অনেক কিছুই অপেক্ষা করছে আমার জন্যে৷ পাঠকমাত্রই চমকে যাওয়ার মতো কিছু৷ বাস্তবেও তাই পেলাম৷

প্রতিটি পৃষ্ঠা ইসলামের সোনালি অতীতের ইতিহাস-ঐতিহ্যের একেকটি ভাণ্ডার৷ জগদ্বিখ্যাত বিরাট বিরাট কিতাবের উদ্ধৃতি বইটিকে এতোই তথ্যসমৃদ্ধ করেছে যে, সাধারণত সফরনামা এমন হয় না৷ এ তো সফরনামা নয়, যেন ইলমের খাযানা৷ সফরনামা, কিন্তু প্রতিটি পৃষ্ঠায় পাঠক পাবে ঈমানদীপ্ত ইতিহাসের বিরল স্বাদ৷ বইটি পাঠের সঙ্গে সঙ্গে পাঠক ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে নিজেকে আবিষ্কার করবে৷ সোনালি অতীতে হাতড়ে ফিরবে৷ নিজেকে সেই ইতিহাসের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবে অনুভূত হবে৷ আবার প্রতিটি জায়গায় পাঠক হযরতের সঙ্গও লাভ করবে৷

এ যেন একসঙ্গে অতীত-বর্তমানের সমন্বয়৷ হযরত যেখানেই তাশরীফ নিয়েছেন, প্রতিটি এলাকার ভৌগলিক বিবরণ, পাহাড়, টিলা, নদী-নালা, গাছগাছালি, ঘর-বাড়ি, মসজিদ, মাজার ইত্যাদির নিখুঁত বিবরণ এসেছে, যেন পাঠক নিজ চক্ষে সবকিছু অবলোকন করছেন৷

তাই বইটি পড়ুন। ইসলাম ও মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হবেন। জানার পরিধি বাড়বে, জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে।

-জিয়াউর রহমান
২২/৯/২০১৬